,

ভৈরবে ওসির বিরুদ্ধে ঘুস নেওয়ার অভিযোগ

জেলা প্রতিনিধি, কিশোরগঞ্জ: ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ (ভারপ্রাপ্ত ওসি) শাহিন মিয়ার বিরুদ্ধে ৬০ হাজার টাকা ঘুস নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

এ বিষয়ে গণঅধিকার পরিষদের স্থানীয় নেতা ইমতিয়াজ আহমেদ কাজল বুধবার রাতে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন।

ওই স্ট্যাটাসে ইমতিয়াজ আহমেদ কাজল লিখেছেন, গত ১৩ ডিসেম্বর সুজন নামের এক আসামিকে গ্রেফতারের পর ছেড়ে দেওয়ার আশ্বাসে তার পরিবারের পক্ষ থেকে ৬০ হাজার টাকা ওসিকে ঘুস দেয়। উপজেলার শ্রীনগর ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি জাকির মিয়ার মাধ্যমে ঘুসের টাকা দেওয়া হয়। ঘুসের ৬০ হাজার টাকা নেওয়ার পরও ওসি আসামি সুজনকে না ছেড়ে কারাগারে পাঠায়। পরে টাকা দেওয়ার বিষয়টি গতকাল ১৮ ডিসেম্বর বুধবার দুপুরে জাকির মিয়া গণপরিষদ নেতা ইমতিয়াজ আহমেদ কাজলকে জানান। ঘটনা জানার পর কাজল ওসিকে মোবাইলে ফোন দিয়ে টাকার বিষয়টি জিজ্ঞাসা করলে তিনি (ওসি) টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করেন। এরই মধ্য ওসি শাহিন আসামি সুজনের ভাগ্নে মোরসালিনকে ডেকে বুধবার বিকালে ৫৯ হাজার টাকা ফেরত দেন।

এ বিষয়ে ফেসবুকে লেখালেখি শুরু হলে কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপারের নজরে আসে। পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী বুধবার রাতেই ঘটনাটি তদন্ত করতে ভৈরব সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার নাজমুস সাকিবকে নির্দেশ দেন। পরে শুরু হয় তদন্ত। এখনো তদন্ত চলমান আছে বলে জানা গেছে।

এ ঘটনা নিয়ে ফেসবুকসহ ভৈরবে তোলপাড় শুরু হলে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে যুবদল নেতা জাকির মিয়া ভৈরব প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।

সংবাদ সম্মেলনে জাকির মিয়া বলেন, আসামি সুজন গ্রেফতারের বিষয়ে আমি ওসি শাহিনকে কোনো টাকা-পয়সা দেইনি। গণপরিষদ নেতা ইমতিয়াজ আহমেদ কাজল আমার নাম জড়িয়ে ফেসবুকে যে স্ট্যাটাস দিয়েছেন, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, কাল্পনিক।

বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার দিকে নিজের অফিসে পালটা এক সংবাদ সম্মেলন করে ইমতিয়াজ আহমেদ কাজল বলেন, গ্রেফতার সুজনের আত্মীয়-স্বজনসহ অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম মামুন বুধবার ৬০ হাজার টাকা ঘুস নেওয়ার বিষয়টি আমাকে জানায়। ঘুসের টাকা ফেরতের ব্যবস্থা করে দিতে তারা আমাকে অনুরোধ করেন। তাদের অভিযোগ জানার পর আমি ওসিকে ফোন করে বিষয়টির সত্যতা জানতে চেষ্টা করি। তখন ওসি শাহিন ঘুসের কথা অস্বীকার করেন। সন্ধ্যায় জানতে পারি ওসি সুজনের স্বজনকে ডেকে ৫৯ হাজার টাকা ফেরত দিয়েছেন। কাজেই ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছি বলেই ওসি ঘুসের টাকা ফেরত দিতে বাধ্য হন।

ভৈরব সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার নাজমুস সাকিব বলেন, ফেসবুকে ঘটনার স্ট্যাটাস দেখে কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার ঘটনা তদন্ত করতে আমাকে ফোনে নির্দেশ দেন। আমি ঘটনার অভিযোগকারী কাজল, আসামির আত্মীয়-স্বজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করছি। তদন্তকাজ এখনো শেষ হয়নি। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমি কিছুই বলতে পারব না।

কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরীর সঙ্গে এ বিষয়ে মোবাইলে কথা হলে তিনি বলেন, অভিযোগের বিষয়টি আমি ফেসবুকে দেখে অবগত হওয়ার পর সহকারী পুলিশ সুপার নাজমুস সাকিবকে ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। কেউ অভিযোগ করলে তার সত্যতা পেতে হবে। অনেকেই পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। ঘুস নেওয়ার প্রমাণ পেলে অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই বিভাগের আরও খবর